শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৩

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রানু মুখার্জী



গত ১৫ই মে তারিখে ফেবু বন্ধু কবি নির্মলেন্দু গুণের একটা লেখা পড়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ভানু) আর তার প্রিয়জন রানুকে নিয়ে একটা কিছু লিখতে খুব ইচ্ছে হল। লিখার পর কবিতাটির শিরোনাম দিতে হল ‘রানুর খোঁজে ভানুদাকে চিঠি।‘ কবিতাটি ছিলঃ


রানুর খোঁজে ভানুদাকে চিঠি


ভানুদা, জন্মপত্রে আমারা দুজন জন্মতারিখে এক   
তবে তারকা লগ্নে নিশ্চয় ছিল  প্রভূত গণ্ডগোল,   
তাইতো তোমার সুন্দর কোন বিন্দুকে প্রিয় সখে
আমার আঁধারে তুলতে পারিনি সম্ভবে কোনদিন।

সব বাদ দিয়ে, অন্তিমে আমি, রানুকে চেয়েছি বুকে   
খুঁজেছি তাহাকে লাবণ্য লতায় সুগন্ধ জারিত প্রাণে,   
নন্দিনী ছিল, আঁকতে চেয়েছি রানুরই প্রতিচ্ছবি  
খুঁজেছি তাহাকে অন্তরাগে তোমার সাজানো ফুলে।    

খুঁজেছি অনেক, রানুকে খুঁজেছি, কই গেল বল রানু!
ভানুদা তুমি বোঝনি আমার প্রনয় জাগানো ভাষা,    
কখনো তুমি ভেবেও দেখোনি আমারও বাগান আছে  
এবং ওখানে রক্তগোলাপে অনুরাগ জেগে থাকে।      

শত চিঠি লিখে প্রতিদিন আমি পাঠিয়েছি রানুকে  
রানু নামে কেউ কখনো লেখেনি বক্ষের ঠিকানায়,   
ভানুদা শোন, তুমি আজ বল, আমি তবে যাই কই
বুকে কি আমার রাখতেই হবে মরুভুমি সাহারার?  


[কবি নির্মলেন্দু গুণের যে লেখাটি পড়ার পরে কবিতাটির সৃষ্টি হল, সে লেখাটিও তুলে দিচ্ছি। ওখানে কবি গুণ লিখেছিলেন—“রবীন্দ্রনাথ   সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পত্র লিখেছেন রানুকে। প্রশান্তকুমার পালের রবিজীবনীতে সেই সংখ্যাটা দুই শতাধিক বলেই মনে পড়ছে। রানুর পুরো নাম হচ্ছে রানু মুখার্জী। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে রানু মুখার্জীর ‘বিশেষ সম্পর্ক’নির্ভর একটি উপন্যাস লিখেছেন-- রানু ভানু নামে। আমি শুনেছি, বইটি দেখিও নি, সেটি পড়িও নি। কবিগুরুর সবচেয়ে বিশ্বস্ত-জীবনীকার প্রশান্তকুমারের রচনাতেও কিশোরী রানুর সঙ্গে প্রৌঢ় কবির ঐ বিশেষ সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে বর্ণিত হয়েছে। একটি পত্রে রানু কবিকে এমন কথাও লিখেছেন—‘ভানুদা ( রবীন্দ্রনাথকে রানু এই বিশেষ নামেই ডাকতন) তুমি না বলেছো,  আমাদের বিয়ে তো হয়েই গেছে। কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা, মনে-মনে।‘   

কবি নির্মলেন্দু গুণ কবিগুরু আর রানু মুখার্জীর একটা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন—‘সুন্দরীতমা রানুর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের (ভানুদার) একটি খুব অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আজকে খুঁজে পেলাম অন্তর্জালে জাল ফেলে। যেখানে দু’জনকেই বেশ চিন্তিত মনে হচ্ছে। তুমি এসেছিলে তবু আসো নাই, জানায়ে গেলে-- এই গানটি কি রানুকে নিয়ে রচিত? ছবিটি দেখে আনন্দের চেয়ে কষ্টই পেলাম বেশি।‘

কবিগুরু আর রানু মুখার্জীর  ছবিটি এখানে তুলে দেয়া হল। ছবিটি শান্তিনিকেতনে, ১৯৩৩ সালে তোলা।] 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন